ভারতীয় সংসদের দুটি কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক সম্পর্ক আলোচনা করো|| উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান

 Parasuna:- উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান,অষ্টম অধ্যায়ঃ ভারতের আইন বিভাগ এই অধ্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো-ভারতীয় সংসদের দুটি কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক  সম্পর্ক আলোচনা করো।  অথবা ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো। এই প্রশ্নটি নানানভাবে ঘুরিয়ে আসে। তবে যাই হোক এবছরের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষাদের জন্য প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলের অন্তর্বর্তী টেস্ট পরীক্ষায় আসতে পারে আবার ফাইনাল পরীক্ষায়ও আসতে পারে। তাই প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করে নাও। প্রশ্নটির পিডিএফ ফাইল তোমরা পেয়ে যাবে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে ।



■ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভালো ফল করতে হলে অবশ্যই ছোট প্রশ্নের পাশাপাশি রচনাধর্মী প্রশ্নও ভালোভাবে পড়তে হবে। তবেই 90% নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অবহেলা না করে তাড়াতাড়ি নোটটির পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়াশোনা শুরু করে দাও।


উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অষ্টম অধ্যায়, ভারতের আইন বিভাগ , রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর।



প্রশ্নঃ- ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করো।

 অথবা ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো।
 অথবা ভারতীয় সংসদের দুটি কক্ষে সাংবিধানিক সম্পর্ক আলোচনা করো।
 অথবা লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে কী কী সাদৃস্য  ও বৈসাদৃশ্য রয়েছে তা আলোচনা করো।


              উত্তর 

লোকসভা ও রাজ্যসভার সম্পর্ক:- ভারতের পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছে লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে। ভারতের আইনসভার দুটি কক্ষের মধ্যে গঠনগত ও ক্ষমতাগত কিছু সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। এদুটি কক্ষের ক্ষমতার তুলনামূলক আলোচনা নিম্নে করা হলো-


পার্থক্য লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে যেসব বিষয়ে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়, সেগুলি হল-

সদস্যদের বয়সঃ- লোকসভার সদস্য হতে গেলে প্রার্থীকে অন্তত 25 বছর বয়স্ক হতে হবে । কিন্তু রাজ্যসভার সদস্য হতে গেলে প্রার্থীকে অন্তত 30 বছর বয়সী হতে হবে।

সদস্য সংখ্যাঃ- লোকসভার সর্বাধিক সদস্য সংখ্যা হল 552 জন এবং বর্তমান সদস্য সংখ্যা 545। তবে লোকসভার তুলনায় রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা অনেক কম অর্থাৎ 250 জন। তবে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা 245 জন।

নির্বাচনগত পার্থক্যঃ- লোকসভা সদস্যরা সর্বাধিক প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত হয় ।অর্থাৎ প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন । আবার রাজ্যসভার সদস্যরা অর্থাৎ 238 জন পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন এবং 12 জন রাষ্ট্রপতির দ্বারা মনোনীত হয়।


কার্যকালঃ- লোকসভার সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। তবে জরুরি অবস্থার সময় মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করা যায়। কিন্তু রাজ্যসভার যে কোনো সদস্যের কার্যকালের মেয়াদ ছয় বছর ধর্য্য করা হয়েছে।

কক্ষগত পার্থক্যঃ- লোকসভা একটি স্থায়ী কক্ষ। কারণ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই লোকসভা রাষ্ট্রপতি ভেঙে দিতে পারেন । তবে রাজ্যসভা একটি স্থায়ী কক্ষ ।কারণ নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে রাজ্যসভা ভেঙে দেওয়া যায় না।


সাদৃশ্যঃ- লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে কতগুলি বিষয়ে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন-

বিল পাসঃ- পার্লামেন্টে বিল গ্রহণ সংক্রান্ত ক্ষমতার ক্ষেত্রে একমাত্র অর্থবিল ছাড়া রাজ্যসভা ও লোকসভা সমান ক্ষমতা ভোগ করে সমস্ত বিলের ক্ষেত্রে।

সংবিধান সংশোধনঃ- ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে  লোকসভা ও রাজ্যসভা সমান ক্ষমতা ভোগ করে। অর্থাৎ উভয় কক্ষের সম্মতি ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা যায় না।

রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনঃ- রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির ব্যাপারে উভয় কক্ষ সমান ক্ষমতা ভোগ করে। এছাড়াও সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি নির্বাচন, কমিশনার, ভোট পরীক্ষক প্রমুখের নির্বাচন পদ্ধতির ব্যাপারেও সমান ক্ষমতা ভোগ করে উভয় পক্ষ।

লোকসভার প্রাধান্যঃ- নানান বিষয়ে সাদৃশ্য থাকা সত্বেও কিছু কিছু বিষয়ে লোকসভা রাজ্যসভার তুলনায় অধিক ক্ষমতা ভোগ করে। যেমন কোনো বিল অর্থবিল কি না? সে বিষয়ে মতবিরোধ ঘটলে লোকসভার অধ্যক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। আবার সাধারণ বিল নিয়ে মতবিরোধ ঘটলে লোকসভার মতামতই প্রাধান্য পায়। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার সম্পর্কেও রাষ্ট্রপতিকে প্রস্তাব দিতে পারে একমাত্র লোকসভা। 


রাজ্যসভার প্রাধান্য আবার রাজ্যসভা কতকগুলি বিষয়ে একক ক্ষমতা ভোগ করে। যেমন জাতীয় স্বার্থে রাজ্য তালিকার কোনো বিষয় সম্পর্কে আইন প্রণয়ন করা, সর্বভারতীয় চাকরি সৃষ্টি করা এবং উপরাষ্ট্রপতির পদত্যাগ প্রভৃতির প্রস্তাব করতে পারে। 


আরো পড়ো.......

Post a Comment

3 Comments